এক্সপ্রেস ডেস্কঃ প্রতিবছর ঈদ-উল-আযহায় ভারত থেকে বিপুল সংখ্যক গরু বাংলাদেশে কোরবানি উপলক্ষে আনা হয়। করোনা ভাইরাস মহামারী ও দেশের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বছর ভারত থেকে গরু আমদানির না করার।
সাধারণত প্রতি বছর কোরবানির আগে সীমান্তে বিট খাটাল এর মাধ্যমে গরু আমদানি করা হলেও এবছর ‘বিট খাটাল’ এর অনুমোদন দেয়নি সরকার।
এ বিষয়ে গত সোমবার (২২ জুন) শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত চামড়া শিল্পের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন টাস্কফোর্সের দ্বিতীয় সভায় এসব তথ্য জানান মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সাহেদ আলী।
এ বিষয়ে সচিব মোঃ সাহেদ আলী যোগ করেন দেশের ব্যবসায়ীরা যাতে গবাদি পশুর ভালো দাম পান সেজন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
অনলাইনে সংঘটিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন ও বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এ সময় সভায় উল্লেখ করা হয় আগামী বুধবার থেকে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হবে এবং চামড়া সংরক্ষণে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিগণ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সহযোগিতা করবে।
এবছর ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে মসজিদের ইমাম, মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী এবং চামড়া ছড়ানো ও সংরক্ষণের কাজে জড়িতদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
করুনা পরিস্থিতিতে বিপদ এড়ানোর জন্য চামড়া সংরক্ষণে তথ্য মন্ত্রণালয় ও লেদার বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল জনসচেতনামূলক বিজ্ঞাপন প্রচারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম প্রচার কার্যক্রম চালাবে বলে জানা যায়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী জানা যায়, দেশে বিগত কয়েক বছরে পবিত্র ঈদুল আযহায় ১ কোটি ১০ লাখের মতো পশু কোরবানি দেয়া হয়। এ সংখ্যার মধ্যে রয়েছে ৪০ থেকে ৫০ লাখ গরু – মহিষ এবং এই ৪০ থেকে ৫০ লাখ গবাদিপশুর চাহিদা সরকার এবছর দেশীয় মার্কেট থেকে পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যান্য পশু যেমন ছাগল, দুম্বা, হাতে গোনা উঠ ইত্যাদিও বাংলাদেশ কোরবানি দেওয়ার প্রবণতা গত কয়েক বছর ধরে তৈরি হয়েছে।
তাছাড়া অনেকেই ধারণা করছেন করোনা পরিস্থিতিতে হয়তো অন্যান্য বছরের চেয়ে কম পশু কোরবানি হতে পারে।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার এক্সপ্রেস এর সাথে কথা হয় মৌলভীবাজারের স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আমজাদ আলীর সাথে। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত কতটুকু সাহায্য করবে জিজ্ঞেস করায় উনি বলেন, ‘পেশাদার ব্যবসায়ীরা করোনা ভাইরাসের কারণে গত তিন চার মাস ধরে অত্যন্ত কঠিন অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ভারত থেকে গরু না আসায় হয়তো গরুর ভালো দাম পাওয়া যাবে, যদি অন্যান্য বছরের মতো সামর্থ্যবান সকলে কুরবানী দিতে এগিয়ে আসেন।’
তবে তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, চোরাই পথে হয়তো ভারত থেকে বর্ডার পার হয়ে অনেক গরু স্থানীয় বাজারে চলে আসতে পারে। সেজন্য মৌলভীবাজার, সিলেট এর মত সীমান্তবর্তী জেলায় এর প্রভাব পড়তে পারে। এ ব্যাপারে সরকারের ও প্রশাসনের সতর্কতা অবস্থান জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।