বড়লেখা-জুড়ী সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে

বড়লেখা, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার সংযোগকারী প্রধান সড়কটির বেহাল দশা বর্তমানে জনদুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে এবং পরিবহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ ও পরিবহন শ্রমিকরা।

বড়লেখা শহর থেকে জুড়ী উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত এই সড়কটি দুই উপজেলার মানুষের যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন শত শত ছোট-বড় যানবাহন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক মাস ধরে সড়কটির অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে গর্তগুলোতে পানি জমে পুকুরে পরিণত হয়, যা গাড়ি চালকদের জন্য মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক স্থানে পিচের আস্তরণ সম্পূর্ণ উঠে গিয়ে ইটের খোয়া বেরিয়ে এসেছে।

ভুক্তভোগী বাস চালক মজনু মিয়া বলেন, “এই সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে আমাদের জীবন ওষ্ঠাগত। বড় বড় গর্ত এড়াতে গিয়ে প্রায়ই গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারায়। সাসপেনশন নষ্ট হচ্ছে, গাড়ির মেরামত খরচ বাড়ছে। যাত্রীরাও বিরক্ত। আমরা প্রতিদিনই দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকি।”

অটোরিকশা চালক করিম উদ্দিন জানান, “রাতের বেলায় এই সড়কে চলাচল করা আরও বিপজ্জনক। গর্তগুলো ঠিকমতো দেখা যায় না, ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আমার নিজের রিকশার টায়ার কয়েকবার গর্তে পড়ে ফেটে গেছে।”

স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জানান, সড়কটির খারাপ অবস্থার কারণে পণ্য পরিবহনে সময় বেশি লাগছে এবং পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে, যা পণ্যের দামে প্রভাব ফেলছে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা দ্রুত সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেছেন।

বড়লেখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা সড়কটির বেহাল দশার বিষয়ে অবগত। জনদুর্ভোগ কমাতে আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছি। আশা করি, খুব শিগগিরই সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা-জুড়ী সড়ক সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে বরাদ্দ পেতে কিছুটা সময় লাগছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

তবে, স্থানীয় জনগণ এত আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন। তারা বলছেন, দ্রুত যদি সড়কটি সংস্কার না করা হয়, তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন। তাদের দাবি, আসন্ন পবিত্র ঈদের আগে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করে তোলা হোক, যাতে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কম হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here